প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন!

 | BanglaKagaj.in

প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ৭৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেল ৫টায় তিনি মারা যান। সৈয়দ মনজুরুল ৩ অক্টোবর ধানমন্ডির ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ পরিদর্শনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চালকের সহায়তায় তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিত্সকরা বলেছিলেন যে তিনি একটি বিশাল হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন, তারপরে তার হার্টে একটি স্টেন্ট স্থাপন করা হয়েছিল। অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া এবং ফুসফুসে তরল জমার কারণে শনিবার তার অবস্থার অবনতি হয়। রোববার সন্ধ্যায় লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পরে আবার অবনতি হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম সরিয়ে দিলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ শুক্রবার বারডেম মর্গে রাখা হবে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীরা ঘোষণা করেছেন। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বাংলাদেশে সাহিত্য, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আলোচনায় তাঁর অবদানের জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত ছিলেন। ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণকারী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ও রাবেয়া খাতুনের ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করার আগে তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও এমসি কলেজে অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মনজুরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা করেন, যেখানে তিনি দেশের অন্যতম সম্মানিত শিক্ষাবিদ হয়ে ওঠেন। শিক্ষা ও বৃত্তিতে তার আজীবন অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অবশেষে তাকে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করা হয়। শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন একজন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও সমালোচক। তাঁর সাহিত্য সমালোচনার মধ্যে ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, সমর সেন এবং শামসুর রাহমানের মতো ব্যক্তিত্ব। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘থাকা না ঠাকর গল্প’, ‘কাঁচ ওয়াঙ্গা রাতের গল্প’, ‘অন্ধকার ও আলো দেখের গল্প’, ‘আধখানা মনহু’, ‘দিনরাত্রিগুলি’, ‘আজগুবি রাত’, ‘তিন পোরবার জীবন’ এবং ‘নন্দনত্ব’। তাঁর কথাসাহিত্য প্রায়শই ইতিহাস, রাজনীতি এবং মানুষের অবস্থার ছেদগুলিকে অন্বেষণ করে, যা তাঁকে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি 1996 সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং 2018 সালে একুশে পদক লাভ করেন। শ্রেণীকক্ষ ও পাতার বাইরে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনে মঞ্জুরুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। 2018 সালে, তিনি লেখক সমিতি পেন বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাচিত হন, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে। তিনি প্রকাশনা এবং অনুবাদ উদ্যোগের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন, যা বাংলাদেশী সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের কাছে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। সান নিউজ/আরএ কপিরাইট © SunNews24x7 (TagstoTranslate) অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম (টি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


প্রকাশিত: 2025-10-10 21:12:00

উৎস: en.sunnews24x7.com